১.
সংবিধানে মৌলিক অধিকারের সন্নিবেশঃ সংবিধানে মৌলিক অধিকারের সন্নিবেশ করতে
হবে। বিশেষ করে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকারগুলো ভোগের উপযুক্ত
পরিবেশ বজায় রাখতে হবে। অর্থনৈতিক অধিকার ছাড়া ব্যক্তি সুষ্ঠুভাবে
জীবনযাপন করতে এবং তার ব্যক্তিত্বের পূর্ণ বিকাশ সাধন করতে পারে না।
অর্থনৈতিক অধিকারের নিশ্চয়তা না থাকলে নাগরিকের সামাজিক ও রাজনৈতিক
অধিকারগুলো অর্থহীন হয়ে পড়ে।
২. মত প্রকাশের স্বাধীনতাঃ প্রত্যেক
নাগরিককে তার চিন্তা, মত ও বক্তব্য প্রকাশের স্বাধীনতা প্রদান করতে হবে।
কেননা এসব অধিকার ব্যতীত কোন ব্যক্তি সভ্য ও সুন্দর জীবনযাপন করতে পারে না।
এসব অধিকারের অভাবে ব্যক্তিসত্তারও পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটে না।
৩.
শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমস্যার সমাধানঃ সহিংসতার পরিবর্তে শান্তিপূর্ণ উপায়ে
যেন সমস্যার সমাধান বা দাবি-দাওয়া মেটানো যায় তার অনুকূল পরিবেশ গড়ে
তুলতে হবে। আলোচনার পরিবেশ তৈরি ও সবসময় তা বজায় রাখতে হবে।
৪.
দায়িত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠাঃ দায়িত্বশীল গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা
প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে শাসন বিভাগ সবসময়
তাদের গৃহীত সিদ্ধান্ত ও কাজের জন্য আইনসভার নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য
থাকবে। আইনসভার আস্থা হারালে মন্ত্রিসভা পদত্যাগ করবে। রাষ্ট্রপতিশাসিত
সরকার হলে সেক্ষেত্রে আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের ন্যায় কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ
প্রতিষ্ঠিত হবে।
৫. জবাবদিহিমূলক জনপ্রশাসনঃ দায়িত্বশীল ও
জবাবদিহিমূলক প্রশাসন গড়ে তুলতে হবে। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সবসময়
দায়িত্বশীল ও জবাবদিহিমূলক আচরণ করবে।
৬. দক্ষ ও কার্যকর সরকারঃ
দক্ষ ও কার্যকর সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সরকার দক্ষ না হলে এবং কার্যকর
প্রশাসন গড়ে তুলতে ব্যর্থ হলে কোনোদিনই সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।
৭. জনসম্মতিঃ সরকারের কাজের বৈধতা অর্থাৎ সরকারের গৃহীত সিদ্ধান্তের প্রতি জনগণের সম্মতি থাকতে হবে।
৮.
সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে
সরকারকে তৎপর হতে হবে। উচ্চাভিঙ্গাধী ও ভুল সিদ্ধান্ত সুশাসন প্রতিষ্ঠা
ব্যাহত করে।
৯. স্পষ্টতা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠাঃ সরকারের কাজ এবং
গৃহীত নীতি ও সিদ্ধান্ত হতে হবে স্পষ্ট ও স্বচ্ছ। জনগণ যেন সরকারের
ইচ্ছা-অনিচ্ছা বুঝতে পারেন। এরূপ হলে রাষ্ট্রীয় কাজে জন অংশগ্রহণ বৃদ্ধি
পাবে।
১০. একাধিক রাজনৈতিক দলের উপস্থিতিঃ একাধিক রাজনৈতিক দল থাকতে
হবে এবং তারা যেন তাদের কার্যকলাপ স্বাধীনভাবে চালাতে পারে, মত প্রকাশ
করতে পারে, সংঘটিত হতে পারে, তার অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখতে হবে।
১১.
অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনঃ অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ব্যবস্থা চালু রাখতে
হবে। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে মুক্ত, নিরপেক্ষ ও স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে
হবে। নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচন কমিশনের হাতে সরকারি কর্মকর্তা-
কর্মচারী নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।
১২. ব্যবস্থাপনায়
দক্ষ ও বিশেষজ্ঞদের নিয়োগঃ ব্যষ্টিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা,
রাজস্ব ও আর্থিক খাত ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা দেখাতে হবে এবং উন্নয়ন
ত্বরান্বিত করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের নিয়োগ করতে
হবে। প্রয়োজনবোধে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিদের দিয়ে সেমিনার-সিম্পোজিয়াম করতে
হবে এবং তা প্রচার করতে হবে।
১৩. দক্ষ জনশক্তিঃ আকস্মিক উদ্ভূত বিষয় মোকাবিলায় পারঙ্গম হতে হবে। এজন্য দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।
১৪.
বিতর্কিত বিষয় সম্পর্কে সাবধানতাঃ বিতর্কিত বিষয়ে সাবধানে সিদ্ধান্ত
গ্রহণ করতে হবে। কোনো অবস্থায় যেন কোনো বিতর্কিত সিদ্ধান্ত সামাজিক ও
রাজনৈতিক পরিবেশকে উত্তপ্ত করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
১৫. আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাঃ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আইনের যথার্থ প্রয়োগ যেন ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
১৬.
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণঃ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত
করতে হবে। বিচারকদের চাকরির নিশ্চয়তা প্রদান এবং সামাজিক মর্যাদা প্রদান,
বেতন-ভাতা প্রদান ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।
১৭.
আইনসভাকে গতিশীল ও কার্যকর করাঃ সংসদকে গতিশীল ও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে
দিতে হবে। সংসদ সদস্যগণকে সংসদে বসেই সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে। জাতীয়
সংসদকে আইন প্রণয়নে সার্বভৌম ক্ষমতা প্রদান করতে হবে।
১৮. সহিংসতা পরিহারঃ রাজপথে সহিংস আন্দোলন, জ্বালাও-পোড়াও ছেড়ে সংসদে বসে আলোচনার টেবিলে সমস্যার সমাধান খুঁজতে হবে।
১৯.
স্পষ্ট, সহজবোধ্য ও সময়োপযোগী আইন প্রণয়নঃ এমন আইন, বিধি-বিধান প্রণয়ন
করতে হবে যেন তা হয় স্পষ্ট ও সহজবোধ্য। আইন হবে সময়োপযোগী।
২০.
ব্যাপক জনঅংশগ্রহণের সুযোগ সৃষ্টিঃ রাজনৈতিক, প্রশাসনিক কাজ ও নীতি
প্রণয়নে জনগণের অংশগ্রহণের সুযোগ উন্মুক্ত করে দিতে হবে এবং নাগরিক
সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিতে সচেষ্ট থাকতে হবে।
২১. শক্তিশালী স্থানীয়
সরকারঃ শক্তিশালী স্বশাসিত স্থানীয় সরকার গড়ে তুলতে হবে। এগুলোর ওপর কোনো
ধরনের বাহ্যিক খবরদারি অর্থাৎ প্রশাসনিক কর্মকর্তা কিংবা জাতীয় সংসদ
সদস্যদের খবরদারি না থাকাই শ্রেয়৷
২২. সংস্কার কর্মসূচি
বাস্তবায়নঃ সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে রাজনৈতিক সদিচ্ছার বাস্তবায়ন
ঘটাতে হবে। শুধু সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ করলেই চলবে না, তা বাস্তবায়নও
করতে হবে।
২৩. দারিদ্র্য দূরীকরণঃ সরকারকে দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য বাস্তবসম্মত ও সুসমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
২৪.
জনসচেতনতা বৃদ্ধিকরণঃ সুশাসন সম্পর্কে, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা
সম্পর্কে, সরকারের স্থায়িত্বশীলতার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে, জনগণকে অধিকার
ও কর্তব্য সম্পর্কে, সাম্প্রদায়িক শক্তির অপতৎপরতা সম্পর্কে জনগণের
সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য সরকারের প্রচারযন্ত্রকে সবল করে তুলতে হবে।
২৫.
ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠাঃ সরকারের তিনটি বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার
ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এজন্য সংবিধানে স্পষ্ট নির্দেশনা থাকতে হবে।
২৬.
কার্যকর মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠাঃ স্বাধীন, ব্যাপক ক্ষমতাসম্পন্ন ও
কার্যকর মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করে আইনের শাসন ও মানবাধিকারকে নিশ্চিত
করতে হবে।
২৭. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বৃদ্ধিঃ কোনো জঙ্গী,
মৌলবাদী, অশুভ সাম্প্রদায়িক শক্তি যেন মাথাচাড়া দিতে না পারে,
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন বিনষ্ট না হয়-সেজন্য সরকার প্রয়োজনীয়
পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে শুধু সরকারকেই সচেষ্ট হতে হবে তা নয়। এজন্য
নাগরিকেরও অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। কেননা কর্তব্যবিমুখ জাতি কখনো
উন্নতি লাভ করতে পারে না, সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে পারে না।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য নিম্নরূপঃ
১.
সামাজিক দায়িত্ব পালন (To Perform Social Duties): সুশাসন প্রতিষ্ঠার
ভিত্তিভূমি গড়ে ওঠে নাগরিকের সামাজিক দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে। এগুলো
হলো- সামাজিক সম্প্রীতি গড়ে তোলা এবং তা বজায় রাখা, সামাজিক প্রতিষ্ঠান
গঠন বা নির্মাণ এবং তা পরিচালনা করা, সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজন এবং এতে
অংশগ্রহণ করা, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা, সমাজে বসবাসকারী মানুষকে
কুসংস্কার মুক্ত, পরমতসহিষ্ণু ও সংস্কৃতিবান করে গড়ে তোলা ইত্যাদি হলো
নাগরিকের সামাজিক দায়িত্ব।
২. রাষ্ট্রের প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্য
প্রদর্শন (Unconditional allegiance to the State): রাষ্ট্রের প্রতি
নিঃশর্ত আনুগত্য প্রদর্শন করা সকল নাগরিকের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য।
রাষ্ট্রের আদেশ ও নির্দেশ মেনে চলতে হবে। রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব
ও অখণ্ডতা রক্ষার জন্য প্রত্যেক নাগরিককে চরম ত্যাগের জন্য প্রস্তুত থাকতে
হবে। রাষ্ট্রের বৃহত্তর স্বার্থের জন্য ব্যক্তির ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন
দিতে হবে।
৩. আইন মান্য করা (Obedience to Law): রাষ্ট্রের প্রচলিত
আইন মেনে চলা প্রত্যেক নাগরিকের পবিত্র দায়িত্ব ও কর্তব্য। আইন তৈরি হয়
রাষ্ট্রের অস্তিত্ব রক্ষা ও উন্নততর সমাজজীবন প্রতিষ্ঠার জন্য। আইন অমান্য
করলে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব রক্ষা কঠিন হয়ে পড়ে।
এর ফলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা বাধাগ্রস্ত হয়। আইন শুধু নিজে মানলেই হবে না,
অন্যেরাও যেন আইন মেনে চলে সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
৪. সৎ ও
যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন (Selection of honest and qualified leadership):
নির্বাচনে ব্যক্তিগত স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে সততা ও বিজ্ঞতার সাথে যোগ্য ও
উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচিত করা উচিত। সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে
সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হবে।
৫. নিয়মিত কর প্রদান (Regular
Payment of Taxes): রাষ্ট্র নাগরিকদের ওপর বিভিন্ন ধরনের কর আরোপ করে। কর
থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে রাষ্ট্রীয় কাজ সুসম্পন্ন হয়। নাগরিকগণ যদি
স্বেচ্ছায় যথাসময়ে কর প্রদান না করে তাহলে রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও
অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে এবং সুশাসন বাধাগ্রস্ত হবে।
৬. রাষ্ট্রের
সেবা করা (Public Service): রাষ্ট্রের সেবা করা, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে এবং
রাষ্ট্রকর্তৃক প্রদত্ত অবৈতনিক দায়িত্ব পালন, স্থানীয় স্বায়ত্তশাসিত
প্রতিষ্ঠানে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জনগণের সেবা করা, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে
যে কোনো রাষ্ট্রীয় কাজে সহায়তা করা, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্রকে
সাহায্য-সহযোগিতা প্রদান করা নাগরিকের পবিত্র দায়িত্ব।
৭.
সন্তানদের শিক্ষাদান (To Educate the Children): শিক্ষা ব্যতীত নাগরিক ও
মানবিক গুণাবলির বিকাশ ঘটে না। শিক্ষা নাগরিককে কর্তব্য ও দায়িত্ব পালনে
সচেতন করে। উপযুক্ত শিক্ষা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করে।
পিতামাতার উচিত সন্তানকে উপযুক্ত শিক্ষায় শিক্ষিত এবং কুসংস্কার মুক্ত,
পরমতসহিষ্ণু ও সংস্কৃতিবান করে গড়ে তোলা, যেন তারা বড় হয়ে সুশাসন
প্রতিষ্ঠায় উপযুক্ত ভূমিকা পালন করতে পারে।
৮. রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন
কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ (Participation in Development Activities): জনগণের
জন্যই রাষ্ট্র। কাজেই রাষ্ট্রের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জনগণকেই
স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে। যে কোনো দুর্যোগে, আপদে- বিপদে জনগণকে
তা মোকাবেলায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
৯. জাতীয় সম্পদ রক্ষা (Protect
Public Property): রাষ্ট্রের সকল সম্পদই জনগণের সম্পদ (Public Property)।
কাজেই জন সম্পদ রক্ষার দায়িত্ব পালন করতে হবে জনগণকেই। হরতালের সময়
আবেগবশত কিংবা দুষ্কৃতিকারী ও অসৎ নেতৃত্বের দ্বারা পরিচালিত হয়ে কেউ যেন
রাষ্ট্রীয় তথা জনসম্পদ ভাংচুর বা বিনষ্ট করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে
হবে। ধ্বংসাত্মক কাজে নিজে বিরত থাকতে হবে এবং অন্যদেরকেও বিরত থাকতে
উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
১০. আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় সাহায্য করা (To help
law and order and Discipline): দেশে যদি আইনশৃঙ্খলা দুর্বল হয় বা ভেঙে
পড়ে তাহলে রাষ্ট্রের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়। এর ফলে সুশাসন
বাধাগ্রস্ত হয়। এজন্যই সকল নাগরিককে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আইন শৃঙ্খলা রক্ষায়
সচেষ্ট হতে হবে। এজন্য প্রয়োজনে স্বেচ্ছায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী
বাহিনীকে চোর-ডাকাত-দুষ্কৃতিকারী, উগ্র, হিংস্র, জঙ্গীদের সন্ধান বা
অবস্থান জানাতে হবে।
১১. সচেতন ও সজাগ হতে হবে (Be Conscious and
Alert): সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নাগরিকগণকে সচেতন ও সজাগ হতে হবে। নাগরিকগণ
সজাগ ও সচেতন হলে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা তাদের অধিকার হরণ
করতে পারবে না, স্বেচ্ছাচারী হতে পারবে না, সরকার দায়িত্বশীল ও
জবাবদিহিমূলক আচরণ করতে বাধ্য হবে।
১২. সংবিধান মেনে চলা (To abide
by Constitution): সংবিধান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন। সুতরাং সুশাসন
প্রতিষ্ঠা করতে হলে সকল নাগরিককে সংবিধান মেনে চলতে হবে; সবকিছুর ওপর
সংবিধানকে স্থান দিতে হবে।
১৩. সুশাসনের আগ্রহ (Eagerness to Good
governance): সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নাগরিকদের আগ্রহ থাকতে হবে। সুশাসন
প্রতিষ্ঠায় একজন নাগরিককে প্রশাসনের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের
পাশে দাঁড়াতে হবে, দরিদ্র মানুষকে সাহায্য করতে হবে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে
প্রতিবাদ জানাতে হবে, দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের পাশে এসে দাঁড়াতে হবে।
১৪.
উদার ও প্রগতিশীল দলের প্রতি সমর্থন (Selection of Liberal &
Progressive Political Party): সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নাগরিককে উদার ও
প্রগতিশীল দলের প্রতি সমর্থন জানাতে হবে, সন্ত্রাসী ও সাম্প্রদায়িক
কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয়দানকারী দল ও ব্যক্তিকে এড়িয়ে চলতে হবে এবং ঘৃণা
জানাতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো যেন হরতাল, ধর্মঘট, জ্বালাও-পোড়াও নীতি
পরিহার করে এজন্য চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের করণীয় এবং নাগরিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য -- মোঃ হেলাল উদ্দিন
No comments:
Post a Comment